শীত হোক বা গরম, এমনকি বর্ষা তেও বাঙালি থেমে থাকে না । ভ্রমণ পিপাসু বাঙালি কাজের ফাকে সুযোগ পেলেই পাহাড়ে ছুটে চলে যায় । মোটামুটি সকলেই কম বেশি আমরা দার্জিলিং , গ্যাংটক ঘুরে এসেছি । কিন্তু আজ আপনাদের এমন এক জায়গার কথা বলব যা বলতে পারেন প্রকৃতির নিজেস্ব স্বর্গ রাজ্য । আমরা সকলেই চাই কংক্রিটে ঘেরা জীবন থেকে মুক্তি পেয়ে দুটো দিন শান্ত নিরিবিলি জীবন কাটাতে । যেখানে থাকবে না এক ঘেয়ে গাড়ির হর্ন শব্দ । যেখানে থাকবে না বাধা ধরা এক ঘেয়ে রুটিন। আর যেখানে থাকবে না পর্যটক দের ভীড় । এমনই এক সুন্দর গ্রাম লুকিয়ে আছে সিকিমে ।
এখানে আপনাদের পৌছতে গেলে নিউ জলপাইগুড়ি থেকে সোজা গাড়ি ধরে চলে আসতে হবে পশ্চিম সিকিমে । ছোট্ট এক পাহাড়ী হ্রদ কে ঘিরে গড়ে উঠেছে গোটা এক গ্রাম । এই গ্রামের নামে ছায়াতাল । তাল শব্দের অর্থ লেক । এর জন্য গোটা গ্রামের নামে ছায়াতাল । ঘন সবুজে ঘেরা অরণ্যে ঐ লেক আপনাদের মন আলাদা এক প্রশান্তি এনে দেবে । তার সাথে লেকের ধার বরাবর হাটতে হাটতে শুনতে ও দেখতে পাবেন কত নাম না জানা পাখির ডাক । পাখির কলোকাকলী ছাড়া আর কোন শব্দ আপনারা শুনতে পাবেন না ।
এরই মাঝে আপনাদের চোখে ধরা দেবে শ্বেতশুভ্র মনমোহিনী কাঞ্চনজংঘা । রাতের আকাশ এ পূর্ণিমা আলোয় কাঞ্চনজংঘা আপনাদের ধরা দেবে এক অন্য রূপে । যে রূপ আপনার আগে কখনো দেখেন নি । পাহাড় অরণ্য মাঝে কাঞ্চনজংঘা দেখতে দেখতে নির্জনতা হারিয়ে গিয়ে প্রকিতির সন্নিধ্যই অনেক তা সময় কাটিয়ে দিতে পারবেন । আর সঙ্গে নিয়ে নেবেন এক প্লেট গরম গরম ধোয়া উঠানো মোমো আর কফি ।
এর পর ঘুরে আসুন সামনের এক মনেসট্রি থেকে । মনেসট্রি জায়গায় ও বেশ শান্ত ও নিরিবিলি । পর্যটক দের আনাগোনা খুব কম । মনেসট্রি ভিতর রয়েছে বুদ্ধ মূর্তি । খুব সুন্দর করে সাজানো ।
ছায়াতাল দেখার মতো রয়েছে আর একটি জিনিস , পাহাড়ে গা বেয়ে নেমে আসছে ঝর্ণা । ঝর্ণার জলকে কাজে লাগিয়ে ঘোরানো হচ্ছে বৌদ্ধ চক্র । ট্রেকিং করার ইচ্ছা করলে বেরিয়ে পড়তে পারেন সামনেই রয়েছে হি-বামিওক । যেখানে গেলে পাবেন কাঞ্চনজংঘা রেঞ্জের কাবরু পিকের মন মাতানো অসাধারণ ভিউ ।
কি ভাবে যাবেন ? নিউ জলপাইগুড়ি থেকে ছায়াতাল দূরত্ব মাত্র ১৪৫ কিলোমিটার । গাড়িতে সময় লাগবে প্রায় ৫ ঘণ্টা মতো । শেয়ার গাড়িতে আসতে চাইলে আপনাকে জোরথাঙ্গ হয়ে আপনাকে আসতে হবে ছায়াতাল এ । এর কাছেই আছে রিচেঙপ , পেলিং , দারপ । এখানে প্রচুর হোমস্টে আছে । আগের থেকে বুকিং না করলেও চলে । স্পট গিয়ে নিজের পছন্দ মতো চয়েজ করলেই হবে । এখানে ১৫০০ -২০০০ টাকা রেট পরে মাথা পিছু । থাকা ও খাওয়া সমেত । তো ঘুরে আসতে পারেন সিকিমের অফবিট নতুন এক গ্রামে ।