সম্প্রতি ভারত মহাসাগরে মাঝামাঝি এলাকায় বিরাট একটি গর্তের খোজ মিলেছে বলে খবর প্রকাশ্যে আসে । সমুদ্র বিজ্ঞানীদের দাবি , গর্ত টির নিচের অংশ ভর পৃথিবীর তুলনায় অনেকটাই কম । যার কারণে সেখানে মাধ্যাকর্ষণ শক্তি প্রভাব অনেকটাই হ্রাস পেয়েছে বলে ধারণা গবেষকদের । পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তি নিয়ে গবেষকদের উৎসাহের শেষ নেই । বছরের পর বছর ধরে এর উৎপত্তি ও উৎসস্থল নিয়ে গবেষণা চলছে । ভারত মহাসাগরে দৈত্যাকৃতি গর্ত সন্ধান মেলার পর নতুন করে শুরু হয়েছে আলোচনা । গর্তটির গভীরে পৌছানো গেলে মাধ্যাকর্ষণ শক্তি নিয়ে বিজ্ঞানীদের এত দিনের ধারণায় অনেক পরিবতন আসতে পারে বলে ইঙ্গিত মিলেছে ।
কয়েক বছর আগেই পৃথিবীর কেন্দ্রভাগ নিয়ে গবেষণা শুরু করেছে বেঙ্গালুরু ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউ অফ সাইন্স। বিজ্ঞানীদের একটি দলের নেতৃত্বে রয়েছেন দেবাঞ্জন পাল ও আত্রেয়ী ঘোষ। ভারত মহাসাগরের গভীরে সুবিশাল গর্ত পাওয়া নিয়ে তাত্পর্যপূর্ণ ব্যাখ্যা দিয়েছেন তারা। দেবাঞ্জন ও আত্রেয়ীর যুক্তি, প্রাচীন সমুদ্রের তল থেকে ওই গর্তের উত্পত্তি হয়। টেকটোনিক যুগে দুটি প্লেটের সংঘর্ষের ফলে সমুদ্র গর্ভের ওই জায়গা ডুবে গিয়েছিল। প্রায় ১৪০ মিলিয়ন বছর আগে ধীরে ধীরে সরতে শুরু করেছিল টেকটোনিক প্লেট। এর ফলে নতুন করে গড়ে ওঠে পৃথিবীর কেন্দ্র বা ম্যান্টেল অংশ। ওই সময় আফ্রিকার গভীর থেকে উঠে আসা গলিত শিলার কারণে সমুদ্রের বুকে গর্তটি তৈরি হয়েছিল। এমনটাই দাবি করেছেন ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্সের ভূবিজ্ঞানী দেবাঞ্জন ও আত্রেয়ী।আমাদের পৃথিবী কিন্তু কোনো নিখুঁত গোলক নয়। যদি এটা পুরোপুরি গোলাকার হতো, তাহলে মাধ্যাকর্ষণ ভূপৃষ্ঠের প্রতিটা বিন্দুতে সমান হতো। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। মনে রাখতে হবে, পৃথিবীর উত্তর ও দক্ষিণের দুই মেরু এলাকাই একটু চ্যাপ্টা। আর পেটের বিষুব রেখার জায়গাটি কিছুটা বাইরের দিকে বেরিয়ে এসেছে। তবে ওই গর্তের মধ্যে মাধ্যাকর্ষণ কেন অনেকটা কম, তা খতিয়ে দেখতে হবে।’ এ নিয়ে গবেষণা চলছে বলেও জানিয়েছেন দেবাঞ্জন ও আত্রেয়ী।