কাটোয়া থেকে জায়গাটা খুব একটা বেশি দূরে না যাবো যাবো করে এতদিন যাওয়া হয়ে ওঠেনি। কিন্তু এখন যখন সুযোগ পেয়েছি তখন ভাবলাম ঘুরে আসা যাক সোনারুন্দি রাজবাড়ি উদ্দেশ্যে। আপনারা চাইলে বাসে বা ট্রেনে উভয়ই মুর্শিদাবাদের উদ্দেশ্যে রওনা দিতে পারেন। যদি আপনারা বাসে যান তাহলে বাস আপনাদেরকে এসে থামাবে সোনারুদি বাজার মোড়। আপনাদের চিনে নিতে অসুবিধা হবে না যে রাজবাড়ি যাওয়ার প্রধান রাস্তা কোনটা। আপনারা দেখলেই বুঝতে পারবে কিন্তু যখন আপনারা রাজ বাড়ির সামনে এসে পৌঁছবে তখন প্রথম আপনাদের চোখে পড়বে রাজবাড়ী প্রবেশদ্বার। যার অবস্থা এখন ভীষণ খারাপ। বলতে গেলে কোনরকম টিকে আছে এটি ।এবং এই তোরণটিকে কেন্দ্র করেই বসেছে বাজার। এই বাজারে মধ্যে দিয়ে সোজা এগিয়ে চললাম রাজ বাড়ির উদ্দেশ্যে। খুব সুন্দর বাঁধানো পথ দিয়ে এগিয়ে চলতে চলতে হঠাৎ চোখে পড়বে আরো একটা বিশাল তোরুণ ।এটির আকার আগের থেকে বেশ বড় । কিন্তু দুঃখের কথা সেটিরও অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। এবং এটির মধ্যে দিয়ে প্রবেশ করেই চোখে পড়বে সোনারুন্দি রাজবাড়ি । যদি আপনি ইতিহাসকে ভালোবাসেন তাহলে অবশ্যই এই জায়গার প্রেমে না পড়ে আপনি থাকতে পারবেন না । কিন্তু যদি ইতিহাস না ভালোবাসেন তবুও আপনি প্রেমে পড়ে যাবেন এর শান্ত নিরিবিলি পরিবেশ এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের। রাজবাড়ী প্রধান প্রবেশের অংশটি আপনারা দেখতে পাবেন উত্তরপ্রদেশের ঘটনায় নির্মিত। যা আপনাকে মনে করিয়ে দেবে বৃন্দাবনের কথা ।এই বাড়ীর প্রতিষ্ঠাতা নিত্যানন্দ দেব বাহাদুর ছিল বৈষ্ণবধর্ম দীক্ষিত । আর সেই কারণেই তাদের হাত ধরেই নির্মিত হয়েছিল প্রায় দ্বিতীয় বৃন্দাবন দেখতে এই প্রাসাদটি। একসময় বৈভব ঐতিহ্য এবং প্রাচুর্যে ছিল অতুলনীয় ।আপনারা দেখতে পাবেন বিশাল বিশাল পুকুর আর তার মধ্যে এক একটি পুকুরে আছে সব মস্ত বড় মাছ ।আপনি বিস্কুট কিনে দিলে তারা আপনার সঙ্গে দেখা করতে আসবে ।কিন্তু মানুষের খাবারের জন্য এই মাছ ধরা হয় না ।এই মাছ মারা গেলে গঙ্গার জলে ভাসিয়ে দেয়া হয়। এরকম অনেক কাহিনী জড়িয়ে আছে এই রাজবাড়ী কে ঘিরে। কিন্তু আজ মহাকালের নির্মম পরিণতি তার শেষ চিহ্ন মুছে যাওয়া সময়ের অপেক্ষা। আপনাদের একদিনে ঘোরানোর জন্য এই রাজবাড়ী কিন্তু ভীষণ ভালো। আপনারা যদি একবেলা এখানে কাটিয়ে আসতে পারেন তাহলে আপনাদের ভীষন ভালো লাগবে এবং এর সামনেও আছে গঙ্গাটিকুরি রাজবাড়ী ও।
কালের নিয়মে আমাদের সমস্ত ইতিহাস ঘেরা কতশত রাজবাড়ী আজ যত্নের অভাবে প্রায় ধ্বংসের মুখে। যত্নের অভাবে যা অনেক হারিয়ে গেছে আবার অনেক রাজবাড়ী এই রকম ভগ্ন দশায় পড়ে আছে। কত শত ইতিহাসে যা আমাদের আজও অজানা। যদি ঘেঁটে দেখা যায় এই সমস্ত ইতিহাস তাহলে হয়তো বাংলার মুকুটে আরো পালক যোগ হবে। আরো কতো অজানা কাহিনি জানা যাবে । হারিয়ে যাওয়ার আগে আমাদের প্রচেষ্টা এই সমস্ত ইতিহাসকে আপনাদের সামনে তুলে ধরা এবং নতুন নতুন ঘোরার জায়গা সেই সঙ্গে সন্ধান করা।
কিভাবে যাবেন আপনারা ফ্রেন্ড বাবা সে পৌঁছে যেতে পারেন এই সোনার উদি ট্রেনে এলে আপনাকে নামতে হবে 5 যদি স্টেশনে সেখান থেকে টোটো চেপে আপনি চলে আসতে পারেন সোনারুন্দি রাজবাড়ি আবার একইভাবে টোটো নিয়ে আপনি ঘুরে আসতে পারেন গঙ্গাটিকুরি রাজবাড়ী।
![](https://jayeevlogs.com/wp-content/uploads/2022/02/IMG-20220217-WA0002_opt.jpg)
![](https://jayeevlogs.com/wp-content/uploads/2022/02/IMG-20220217-WA0001_opt.jpg)
![](https://jayeevlogs.com/wp-content/uploads/2022/02/IMG-20220217-WA0000_opt.jpg)