পুজোর তে যারা বেশি হইহই পছন্দ করেন না তারা নিরিবিলি শান্তিতে যদি কোথাও ছুটি কাটাতে চান তাহলে পুজোর ছুটিতে নিরিবিলিতে কাটিয়ে আসুন কটা দিন। ৭৮৮৭ফিট উচ্চতায় অবস্থিত সেঞ্চল ওয়াইল্ডলাইফ স্যাংচুয়ারি এর মধ্যে অবস্থিত কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখার সেরা ঠিকানা । পাহাড় জঙ্গল মেঘের ভেলা ফুল-পখি ট্রাকিং যদি সবাই একসাথে পেতে চান তাহলে একটিবার আপনাকে আসতেই হবে এই স্বর্গরাজ্যে। নিউ জলপাইগুড়ি থেকে এর দূরত্ব মোটামুটি ৬৫ কিলোমিটার গাড়িতে আসতে সময় লাগে তিন ঘন্টা মত। আপনারা চাইলে কার্শিয়াং হয়ে আসতে পারেন আবার আপনারা চাইলে জঙ্গলে পথ ধরতে পারেন। একটু অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমী ও জঙ্গল ভালোবাসেন তাদের এই পথ মুগ্ধ করবেই আবার আপনারা চাইলে দার্জিলিং ঘুম থেকে সোনাদা হয়েও আসতে পারেন দার্জিলিং থেকে এর দূরত্ব খুবই কম মাত্র কুড়ি কিলোমিটার মত। নিউ জলপাইগুড়ি থেকে এলে আপনাদের গাড়ি ভাড়া পড়বে সাড়ে ৩০০০-৩৫০০ টাকা মত । অবশ্যই জাতীয় বড় কোন গাড়ি নেবেন কারণ শেষ কয়েক কিলোমিটার রাস্তায় শুধু বোল্ডার ফেলা এবং আপনাদের journeyও বেশ আরামপ্রদ হবে ।কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখার সেরা সময় কিন্তু অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস। তবে ডিসেম্বর আর জানুয়ারি মাস প্রচন্ড ঠান্ডা থাকে এবং হালকা বরফ হয়তো দেখা মিলতে পারবে। সেন্ট্রাল ওয়াইল্ডলাইফ স্যাংচুয়ারি মধ্যে যেহেতু এটি অবস্থিত তাই এটি প্রবেশের সময় চেকপোষ্টে আপনাদেরকে এন্টিফ্রিজ দিয়েই প্রবেশ করতে হবে মাথাপিছু পরে ১২০ টাকা।। আর গাড়ির জন্য পড়বে আলাদা করে ৪০০ টাকা। কুপন গুলো আপনারা যত্ন করে রেখে দেবেন ফেরার সময় অনেক সময় দেখতেও চায়। এখানে আপনারা আলাদা কোন হোটেল পাবেন না । এখানে আপনাদের হোম স্টেটে থাকতে হবে মাত্র ১৯ টা পরিবারের বসবাস । এখানে এখানে তাদেরই ব্যবস্থাপনায় বিভিন্ন হোমস্টে বিভিন্ন মানের রয়েছে খরচ হবে আপনাদের বারোশো থেকে পনেরশো টাকা মাথাপিছু। এছাড়া আছে wbfdc এর চটপট ইকো-কটেজ । কিন্তু এটি লোয়ার চট করে অবস্থিত আপনারা চেষ্টা করবেন আবার upper চটকপুর থাকার কারণ তার পরিবেশ অসাধারণ। সকাল বেলায় যখন ঘুম থেকে উঠে ঘন জঙ্গলের মাঝে এক কাপ চা হাতে সূর্যের প্রথম কিরণ যখন কাঞ্চনজঙ্ঘা এসে পড়বে আর আপনি সেই দৃশ্য দেখবেন কথা দিচ্ছি আপনার মন প্রাণ জুড়িয়ে যাবে । নিজের চোখে সেই দৃশ্য আপনি না দেখলে বিশ্বাস করতে পারবেন না । এ প্রকৃতির এক অপরূপ মায়া । তারপর আপনি পায়ে হেঁটে চলে যান ছোট ছোট বাঁশের সাঁকো দিয়ে তৈরি ভিউ পয়েন্ট এ । তারপর দেখতে পাবেন বিশাল বড় বড় পাইনের জঙ্গল আর ছোট্ট একটি লেক । যা স্থানীয়রা পুজো করে । লোয়ার চটকপুর মূলত আপনারা দেখতে পাবেন ঘন জঙ্গল তার মাঝে দশ পনের মিনিট হাঁটলেই পৌঁছে যাবেন সেই জলাশয় আপনারা উপর থেকে দেখছিলেন
যে লেকে স্থানীয়রা পুজো করে । তবে এই জঙ্গলে বাঘের আনাগোনা হয় মাঝেমধ্যেই । যারা পাখি দেখতে ভালবাসেন তাদের জন্য এটি একটি স্বর্গরাজ্য । নানা নাম না জানা অজানা পাখিদের এখানে আনাগোনা।এখান থেকেই আপনারা ঘুরে আসতে পারবেন দার্জিলিং ঘুম সোনাদা লেপচা জগতে।
একঘেয়ে জীবন হাঁপিয়ে উঠেছেন তাহলে বেরিয়ে পড়ুন চটপটির উদ্দেশ্যে দুটো দিন নিজের সাথে কাটানো নিজের জন্য কাটান নিজের পরিবার বা নিজের প্রিয় মানুষের সাথে বেরিয়ে পড়ুন। যারা আমার মত ভিড় এড়াতে পছন্দ করেন এবং জঙ্গল প্রেমী তাদের জন্য এই জায়গাটি সবচেয়ে উপযুক্ত । আমিও ভিড় যুক্ত জায়গাগুলি এড়িয়ে চলি। চটক পড়ে সম্বন্ধে আমার ইউটিউব চ্যানেল travel with jayee তে সেই নিয়ে বিস্তারিত ভিডিও পোস্ট করেছি। চাইলে আপনারা সেটি দেখতে পারেন আমি চটকপুর ছাড়াও লেপচা জগতে ঘুরে এসেছি সেটিও অসাধারণ একটি জায়গা মেঘ-পাহাড়ের রাজ্য এবং বড় বড় পাইন গাছের ঘেরা এক অপূর্ব ছোট্ট একটি গ্রাম আমার মতই দুর্গাপুজোর ভিড় এড়াতে খুঁজে বেড়াচ্ছেন পাহাড়ের কোলে নিঃশব্দ শান্তিতে থাকার জায়গা তাদের জন্য বলতে পারি এটি আপনাদের ভীষণ ভলো লাগবে। তার সাথে আপনারা অবশ্যই মনে রাখবেন ভ্যাকসিনের দুটো ডোজ নেওয়া অত্যন্ত জরুরী উত্তরবঙ্গ ঘুরতে যাওয়ার জন্য । সেটি ছাড়া উত্তরবঙ্গে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না এবং ভ্যাকসিনের সার্টিফিকেট নিতে অবশ্যই ভুলবেন না তার সাথে আরও একটি মজার বিষয় হলো দার্জিলিংয়ের ট্রয় ট্রেন এখন চালু হয়ে গেছে একইসথে আপনারা যদি চান তাহলে টয়ট্রেনের ও আনন্দ উপভোগ করতে পারেন। কারণ এটি দার্জিলিংয়ের অত্যন্ত কাছে অবস্থিত অফবিট সুন্দর একটি ছোট্ট গ্রাম। সুস্থ থাকুন সাবধানে থাকুন এবং আমার চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন। ।