আমাদের বাঙ্গালীদের সবচেয়ে প্রিয় জায়গা কিন্তু পুরি। তার সাথের অবশ্য দার্জিলিং আর দীঘা আছে ।কিন্তু আমার মত যাদের সমুদ্র পছন্দ আবার পাহাড় পছন্দ দুটোই একসাথে দেখতে চাই ভাবি কিন্তু হয়ে ওঠে না তার জন্য রইল এই পোস্ট টি। এই পোস্টটি মাধ্যমে আপনাদেরকে জানাবো আপনারা পুরীর ঠিক কোথায় গেলে সমুদ্র এবং পাহাড় দুটো একসাথেই উপভোগ করতে পারবেন ।তো চলুন শুরু করা যাক। ব্যস্ততার চাপে কিছুতেই কোথাও ঘুরতে যাওয়া হচ্ছিল না । কিন্তু ব্যস্ততা কাটিয়ে উঠতে বেরিয়ে পড়লাম পুরীর উদ্দেশ্যে। পুরীর সমুদ্র জগন্নাথ মন্দির অনেকবারই প্রায় ঘুরে এসেছি। মনে মনে ভাবতে লাগলাম নতুন কি দেখার আছে এবার সেটাই আবিষ্কার করা যাক । আমরা তো সব সময় সমুদ্রে স্নান সেরে জগন্নাথ মন্দিরে পুজো দিয়েই এবং গাড়ি ঠিক করে সাইট সিন করে ফিরে চলে আসি । কিন্তু মাথায় এলো এবারে নতুন কিছু খোঁজার । সেই মত আমি একজনের থেকে জানতে পারি পুরীর মধ্যেও কিন্তু একটা সুন্দর জায়গা রয়েছে তবে যেটা কিনা পাহাড় । প্রথমে আমি বেশ অবাক হয়েছিলাম এটা সম্ভব? তো আর দেরি না করে আমি বেরিয়ে পড়লাম পুরীর পাহাড়ের খোঁজে।
পুরীর মন্দির থেকে মাত্র 40 কিলোমিটার দূরে এই পাহাড় অবস্থিত। টুরিস্ট তো দূরের কথা বেশিরভাগ লোকাল যারা থাকে তারা খুব একটা জানেনা এই বিশ্বনাথ মুন্ডিয়া পাহাড় সম্পর্কে। এটি পুরি জেলার ডেলং এ অবস্থিত। পাহাড়ে ওঠার মুখে পড়বে বোর্ডে লেখা হিন্দু ছাড়া প্রবেশ নিষেধ। যেমন লেখা থাকে পুরীর মন্দিরের ক্ষেত্রেও। পাহাড়ে ওঠার রাস্তাটি বাঁধানো পাশে দেওয়া আছে রেলিং রাস্তা । কিছুটা প্লেন আবার কিছুটা সিঁড়ি। তবে অন্যান্য জায়গায় যেমন পাহাড়ে ওঠার ক্ষেত্রে জিগজাগ টাইপের হয় এটা কিন্তু সেরকম নয় । নিজ থেকে সোজা ওপরে মন্দির পর্যন্ত উঠে গেছে। একদম খাড়া রাস্তা অসাবধানতাবশত যদি আপনি ব্যালেন্স হারিয়ে ফেলেন তাহলে নিচে গড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা প্রবল। মাঝে অবশ্য বিশ্রাম নেওয়ার জায়গা আছে। তবে লোকজন ছাড়া এখানে টুরিস্ট নাই। হয়তো এই জায়গাটি সম্বন্ধে এখনো সেই রকম বেশি কোন মানুষ জানেন না বলে। পাহাড়ের মাথায় অবস্থিত ভগবান শিব (বাবা বিশ্বনাথ)। এখানে আপনারা ভালো মতো দেখতে পারবেন বুঝতে পারবেন এটি বৌদ্ধ ও হিন্দু ধর্মের মিলনস্থল ।এই পাহাড়টি মধ্য যুগ ও দার্শনিক প্রাচীন মঠের জন্য পরিচিত। এখানে একটি বরাহ মূর্তির রয়েছে । মহা শিবরাত্রি সংক্রান্তি এইসব দিনগুলোতে মহা ধুমধাম করে পুজো হয় ।এখানে পুজো দেওয়ার সেইরকম কোন টাকা পয়সার জোর-জুলুম নাই । আপনি আপনার খুশি মত যা দেবেন সেটাতেই এখানে পূজো হয়ে যায় । এই পাহাড়ের মাথাতে অনেক দোকান রয়েছে যেখানে 10 টাকা থেকে শুরু করে 100 টাকা পর্যন্ত পুজোর ব্যবস্থা করে দেয় । এবং এখানে আপনি চাইলে বিনামূল্যেও জুতোজোড়া রাখতে পারবেন । পুজো শেষ হয়ে গেলে বেশ কিছুক্ষণ নিরিবিলি একান্তে বসে থাকুন ওখানে । এক অনাবিল শান্তি অনুভব করবেন একেবারে ফাঁকা জায়গা এবং যারা ফটোগ্রাফি করতে ভালোবাসেন তাদের জন্য স্বর্গ।
পুরীতো সবসময়ই যান তাহলে এবার ঘুরে আসুন এই বিশ্বনাথ মন্দির পাহাড় অবশ্যই আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে এবং এই রকম নতুন নতুন অজানা পোস্ট পেতে পেতে সাবস্ক্রাইব করে রাখুন এবং অবশ্যই আমার ইউটিউব চ্যানেল travel with jayee ফলো করুন।