দার্জিলিং এ নতুন অফবিট জায়গা রঙ্গারুন ঘুরে আসতে পারেন স্বল্প খরচায়

দার্জিলিং যেতে কে না ভালোবাসে বলুন? আমি এবার আপনাদের জানাবো দার্জিলিংয়ের নতুন একটি জায়গায় সমন্ধে। দার্জিলিং কি ভাবে যাবেন কম খরচে কি ভাবে ঘুরবেন সেটা আমি আমার আগের পোস্ট এ বলেছিলাম এবং সেটা আমার ইউটিউব চ্যানেল ট্রাভেল উইথ জয়ী তেও দেখতে পারবেন। আজ আমি বলছি রঙ্গারুন সমন্ধে।

বেশ ভোর ভোর উঠে পড়ে ছিলাম দার্জিলিং ম্যাল থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখবো বলে। ভোর তখন ৫:০০ টা। চারিদিক আকাশ লাল। ম্যাল অবশ্য ফাঁকা। তেমন বেশি ভিড় না থাকেলও অনেক পর্যটক প্রাতরাশ সারতে এসেছেন। একদল বাচ্চাদের দেখলাম সকাল এ জগিং করছে। কেউ বা ফ্রী হান্ড এক্সারসাইজ। আমি সকাল সকাল গরম গরম কফি আর মোমো দিয়েই দিন শুরু করেছিলাম। কিছুক্ষন ম্যাল পিছনে ভিউ পয়েন্ট এ বসে অপরূপ সুন্দর ভিউ আর মেঘের আনাগোনা দেখতে থাকলাম। আসতে আসতে দোকানপাট খুলতে লাগলো। বেশ হইচই হয়ে উঠলো ম্যাল পরিবেশ। কিন্তু হঠাৎ করেই মেঘ কালো করে নেমে এলো বৃষ্টি। আমরা গাড়ী ধরে বেরোনোর জন্যে রওনা দিলাম। এটি দার্জিলিঙ থেকে খুব বেশি দুরে নয়। মাত্র ১৬ কিলোমিটার। দেখতে দেখতে আমাদের গাড়ী এসে থামলো টাইগার হিলের পাদদেশে। রঙ্গারুন শব্দটি এসেছে স্থানীয় লেপচা ভাষা থেকে। যার অর্থ নদীর বড় বাঁক। রুন্দুং নদী এই পাহাড়ি উপত্যকায় বাক সৃষ্টি করে বয়ে গেছে তাই এই জায়গার নাম রঙ্গারুন। আমাদের পৌঁছাতে পৌঁছাতে প্রায় বিকাল গড়িয়ে সন্ধ্যা হয়ে গেছে। মাঝে আমরা একটা হোটেল দুপুর এ খাবার খেয়েছিলাম। ভাত সবজি ডাল। আমরা সন্ধ্যা বেলায় এসে পৌছালাম তখন দেখি নিস্তব্ধ। নিরিবিলি ছোট্ট একটি সুন্দর গ্রাম। যার সামনে দিয়ে দার্জিলিঙ শহর তাকে পুরো দেখা যায়। এমন শান্ত নিরিবিলি পরিবেশে কে না থাকতে চায় বলুন। রাতের বেলায় গোটা দার্জিলিঙ শহর তাকে দেখে মনে হলো কত ছোট ছোট তারা যেনো একসাথে মাটিতে নেমে এসে জ্বলছে। দেখে অভিভূত হয়ে গেলাম। রাত এ খাবার সেরে আমরা শুয়ে পড়লাম। রাত এ খাবার খেয়ে ছিল রুটি আর মুরগির মাংস। অপূর্ব সেই স্বাদ। বেশ ভোর ভোর উঠে গেলাম। এখন থেকেই পরিষ্কার ভাবে দেখতে পেলাম রক্তিম আভাছড়িয়ে কাঞ্চনজঙ্ঘার কোল ঘেঁষে উদয় হচ্ছে সূর্য। সে কী অপরূপ দৃশ্য সামনে থেকে না দেখলে বোঝানো সম্ভব নয়। কয়েকঘন্টা এখানেই মনে হচ্ছিলো কাটিয়ে দি। তারপর আমরা সকালে জলখাবার খেয়ে বেরিয়ে পড়লাম সামনে চা বাগান ঘুরে দেখতে। চারিদিক সবুজ। এই চা বাগান গুলি বহু পুরনো সেই ব্রিটিশ আমলের। এখানে ফ্যাক্টরি থেকে দেখতে পাবেন সেই পুরনো দিনের যন্ত্রাংশ। বেশ সুন্দর লাগলো এখানে একটা দিন কাটিয়ে। আপনারা চাইলে দার্জিলিঙ থেকে ফিরবার পথে এই সব গ্রাম গুলো ঘুড়ে দেখে যেতে পারেন। রাস্তার দুধারে রডোডেনড্রন যেমন আপনাকে মুগ্ধ করবে তেমন কাচনজঙ্ঘা দেখেও আপনি মোহিত হয়ে যাবেন। আমাদের শহুরে যানজট কোলাহল জীবন থেকে এই অনাবিল শান্তি আপনাকে মুগ্ধ করে তুলবে। মন চাইবে যেনো বার বার ছুটে আসি এই অজানা অচেনা গ্রাম গুলোতে।

Leave a comment