আজ আমরা ব্যস্ত শহরের কোলাহল ছেড়ে পাড়ি দিচ্ছি সবুজ নির্জনতার পথে আজকে আমাদের গন্তব্য বাঁকুড়ার কোরো পাহাড়। যদি আপনারা গাড়ি কিংবা বাইক নিয়ে যান তাহলে আপনাদের গন্তব্য হবে অসাধারণ। যেতে যেতে আপনারা দেখতে পাবেন দু ধারে সবুজ ঘনও জঙ্গল। লাল মাটির আঁকাবাঁকা পথ পেরিয়ে সোনালী ধানের ক্ষেত। এবং তাতে মাঝে রয়েছে এই পাহাড়। প্রথমেই বলে রাখি কলকাতা থেকেই আসুন বা পার্শ্ববর্তী কোন জেলা থেকেই আসুন এটা পারলে শীতকালে শীতকালে বন্ধু-বান্ধব বা পরিবারের সাথে নিয়ে পিকনিক করে একদিন থাকার জন্য দারুন সুন্দর জায়গা চলুন তাহলে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক করো পাহাড় সম্বন্ধে।
যেতে যেতে আপনারা দেখতে পাবেন রাস্তার দুধারে ঘন জঙ্গল সঙ্গে সরকারি সতর্কতাবাণী। সতর্কতাবাণী হলো হাতির। হাতি এই ঘন জঙ্গলের এক প্রান্ত থেকে বেরিয়ে এই রাস্তাই উপর দিয়ে অন্য প্রান্তে তারা যায়। বাঁকুড়া যাদের বাড়ি তারা সকলেই হাতি দেখেছেন। এই প্রসঙ্গে একটি ছোট অভিজ্ঞতা বলি আপনাদের।
আমার যখন উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হয় তখন এক দূরসম্পর্কের এক আত্মীয় বাড়ীতে পরীক্ষার পর ছুটিতে এসেছিলাম। তখন আমি হাতির দল দেখেছিলাম। সন্ধ্যা বেলায় হাতির দল জঙ্গল থেকে বেরিয়ে গ্রামের রাস্তা ধরে নদী দিকে জল খেতে যাচ্ছিল। অসম্ভব সুন্দর সেই দৃশ্য। আপনারা তার দর্শন পেতে চাইলে সন্ধ্যা বেলাই ঠিক ৬:০০-৬:৩০ আর ভোর বেলায় ৪:০০-৫:০০ মধ্যে বেরোতে হবে। আমরা ছিলাম ফুলবেরিয়ে বলে একটা গ্রাম এ। সেখানে হাতির ভয় এ বিকাল চারটা পর কেও বাড়ি থেকে বেরোই না।
বড় জোড়া পেরিয়ে আমরা চলেছি করো পাহাড় দিকে । মাঝেই পরে সেই ফুলবেরিয়া গ্রামটি। পথের মধ্যেই ধানক্ষেতের মাঝে সাদা বকের সারি দেখতে পেলাম। এবার সেই ফুল বেরিয়া গ্রাম থেকে ডান দিক দিয়ে যেতে হয় কোরোর পাহাড়। রাস্তাঘাটে কাজ চলছে এখনো কথা হয়নি সব রাস্তা রাস্তায় একটু সমস্যা তো আছেই। কিন্তু শান্ত পরিবেশ আদুরীকে সবুজের সমাহার মনটা যেন জুড়িয়ে উঠলো। যেতে যেতে দেখতে পাবেন সোনালী ধানের ভরে গেছে মাঠ চাষিরা ফসল কাটছে। দেখতে দেখতে চলে এলাম কোরো পাহাড়। কাপিষ্ঠা গ্রাম পেরিয়ে এলাম কোরো পাহাড় বা তপোবন পাহাড়। ৪০০ ফুট উঁচু এই পাহাড়ে আছে মহিমানান্দা তপোবন আশ্রম। আর পাহাড়ের চূড়ায় আছে অষ্টভূজা দেবী দুর্গা মা পার্বতী মন্দির চারিদিকে সুন্দর নিস্তব্ধতা দারুন পরিবেশ 117 টা সিঁড়ি ভেঙে নিয়ে উঠতে হবে পাহাড়ের চূড়ায়।
বাঁকুড়া থেকে রানীগঞ্জ ভায়া গঙ্গাজলঘাটি মেজিয়া এই রুটের যেকোনো বাসে অমরকানন স্টপেজে নেমে টোটো বা অন্য ভাড়ার গাড়ি নিয়ে চলে আসুন আশ্রম । এই মন্দিরে খেতে চাইলে সকালবেলায় এখানে এসে আশ্রমে বললেই ব্যবস্থা করে দেবেন।
চারিদিকে পাখির ডাক আর গাছপালায় ভরে গেছে এই পাহাড় থেকে আরও ঘোরার জায়গা আছে। যেমন আরো একটু গেলেই শুশুনিয়া, বিসিন্দা, বিহারীনাথ পাহাড়। সপরিবার নিয়ে একদিন ঘুরে যান প্রকৃতির মাঝে নিরিবিলিতে । কথা দিচ্ছি খারাপ লাগবে না ।
পুরো ভিডিওটি দেখতে আমার ইউটিউব চ্যানেল travel with jayee দেখতে থাকুন আর অবশ্যই ভালো লাগলে like comment share করবেন।