এই গরমের হাত থেকে রেহাই পেতে সবথেকে প্রথমে যে জায়গাটি কথা বলব তা হল সান্দাকফু এটি শৃঙ্গ হল 3636 মিটার দার্জিলিংয়ের সিঙ্গালিলা উদ্যানের পাশে এটি একটি উঁচু পর্বত শৃঙ্গ যেখান থেকে আপনি দেখতে পাবেন পৃথিবীর সবথেকে বড় বড় পর্বত শৃঙ্গ গুলি কে যেমন ধরুন এভারেস্ট কাঞ্চনজঙ্ঘা এবং মাকালু প্রভৃতি সান্দাকফু চাইলে আপনি গাড়ি করে যেতে পারেন অথবা ট্রেক করে যেতে পারেন আপনাকে প্রথমে নামতে হবে জলপাইগুড়ি স্টেশনে এবং সেখান থেকে একটি গাড়ি নিয়ে আপনাকে চলে যেতে হবে মানেভঞ্জন মানেভঞ্জন গিয়ে আপনি একটা রাত্রি বিশ্রাম নিতে পারেন পরের দিন সকালে মানেভঞ্জন থেকে হাজার 1950 সালে তৈরি ল্যান্ড রোভার নিয়ে আপনি সান্দাকফুর উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়বেন এটি হলো ট্রেকারদের জন্য স্বর্গরাজ্য। কাঞ্চনজঙ্ঘা কে ভালোভাবে দেখতে চাইলে অক্টোবর থেকে নভেম্বর মাসের মধ্যে যেতে পারেন কারণ ওই সময় কাঞ্চনজঙ্ঘা পরিষ্কার খোলা আকাশে দেখা যায় আর যদি বরফ পেতে চান তাহলে জানুয়ারি থেকে মার্চ এর মধ্যে আপনাকে যেতে হবে কিন্তু মনে রাখবেন এই সময় প্রচুর ঠান্ডা থাকে আর রডোডেনড্রন আর বাহারি ফুলের মেলা দেখার জন্য এপ্রিল থেকে মে পর্যন্ত ভালো সময় এপ্রিল থেকে মেয়ে এই সময়টি গরমের হাত থেকে রেহাই পাবেন এখানে প্রচুর হোটেল আছে আপনি ইচ্ছামত গিয়ে একটি বুকিং করে থাকতে পারেন এছাড়া ট্রেকারদের জন্য 200 টাকা করে ট্রেকার হাট ব্যবস্থা আছে আপনারা চাইলে থাকতে পারেন সেখানে।
প্রথমদিন :- নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন বা শিলিগুড়ি স্টেশন থেকে মানেভঞ্জন রাত্রে মানেভঞ্জন থাকুন।
দ্বিতীয় দিন:- মানেভঞ্জন থেকে গাড়ি নিয়ে টুমলিং। আপনি ইচ্ছা করলে তো টংলুতেও থাকতে পারেন।
তৃতীয় দিন:- তুমলিং থেকে কলিপোখরি। রাত্রে বিশ্রাম নিতে পারেন। বা সোজা সান্দকফু উদ্যেশ্য বেরিয়ে যেতে পারেন।
চতুর্থদিন :-সান্দাকফুর অপূর্ব সূর্যাস্ত আর স্লিপিং বুদ্ধ কে খুব কাছ থেকে দেখবেন আপনার মন ভরে যাবে অসাধারণ সে দৃশ্য আপনি চোখ ফেরাতে পারবেন না।
পঞ্চম দিন সান্দাকফু ফালুট রাস্তা হারায় এবং খারাপ হওয়ার কারণে গাড়ি আপনার থেকে অতিরিক্ত টাকা চাইতে পারে কিন্তু ফালুট অসাধারণ এক সৌন্দর্য নিরিবিলিতে নিজের সাথে নিজের কিছুটা টাইম কাটানো এক আদর্শ জায়গা।
এরপর দারিয়ার যেতে পারে না কারণ এ রাস্তায় খাড়ায়ে এবং খারাপ হওয়ার জন্য এর ফলে গুরদুম হয়ে শৃঙ্খলা পুরো পত্রে আপনাকে পায়ে হেঁটে নামতে হবে আপনারা চাইলে সান্দাকফু থেকেই গাড়ি নিয়ে ব্যাক করতে পারেন সোজা মানেভঞ্জন এ এবং সেটাই আপনার জন্য উত্তম হবে।
2. ত্রিবেণী:- যারা কাজকর্মের জন্য বেশি দূরে যেতে চান না বা বেশি দিনের ছুটি নিতে চান না তাদের জন্য দু-একদিনের মত জায়গা সন্ধান রইল ত্রিবেণী যারা ক্যাম্প করতে পছন্দ করেন পাহাড়ের নিচে নদীর ধারে তাদের জন্য এই জায়গাটি আদর্শ এই জায়গাটি যে পিস্তা বাজার থেকে মাত্র দু কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এটি উত্তরবঙ্গের একটি দারুণ এবং অজানা জায়গার মধ্যে অন্যতম এই জায়গাটি ত্রিবেণী সঙ্গম নামে পরিচিত এবং তিস্তা ও রঙের মিলনস্থল হল ত্রিবেণী সবথেকে অ্যাডভেঞ্চার যে ব্যাপারটা সেটি হল এখানে তিস্তার ধারে টেন্ট থাকা রাত্রে ক্যামফায়ার এবং চাইলে আপনি চিকেন তাকে গ্রিল করেও খেতে পারবেন বারবিকিউর মতন করে খেতে পারবেন এই সমস্ত আনন্দ উপভোগ করার সুযোগ একমাত্র এখানে। এখানে পনেরশো টাকা প্যাকেজ এ দুপুরের লাঞ্চ টিফিন রাত্রে বারবিকিউ চিকেন ডিনার এবং পরের দিন সকালে সকালের জলখাবার ওই পনেরশো টাকার ভিতরেই পাবেন তাছাড়া যদি আপনি রিভার রাফটিং করতে চান বা মাছ ধরতে চান তাহলে আপনাকে অতিরিক্ত হাজার টাকা দিতে হবে ছোটখাটো দু-তিন দিনের জন্য অ্যাডভেঞ্চার করতে চাইলে গন্তব্য হতেই পারে ত্রিবেণী।
3. ঝালং বিন্দু:- শিলিগুড়ি থেকে মাত্র 99 কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই গ্রাম আপনারা যদি মনে করেন দু-তিন দিনের জন্য বেড়াতে যাবেন তাহলে আপনার জন্য এটি হলো আদর্শ স্থান এটি পশ্চিমবঙ্গের তথা ভারতবর্ষের শেষ গ্রাম বলে পরিচিত এবং তারপরেই শুরু হয়ে যায় ভুটানের সীমান্ত এই অঞ্চলের সৌন্দর্য চোখ জুড়িয়ে যাওয়ার মত এবং এখানে অ্যাডভেঞ্চার প্রেমীদের জন্য আদর্শ জায়গা এখানে এলে আপনারা দেখতে পাবেন চারিদিকে ভীষণ নির্জন নিস্তব্ধ যারা ভিড় পছন্দ করেন তারা অনায়াসে ঝালং গিয়ে নির্জনতা উপভোগ করতে পারেন সারাদিন ধরেই শুধু দেখতে পাবেন ঝরনর জল এবং জলঢাকা নদী বয়ে চলার শব্দ এখানে চারধারে ছোট ছোট কাঠের বাড়ি আপনার মনকে করে তুলবে উৎফুল্ল নিজেকে একটু রিলাক্স করার জন্য ঘুরে আসুন ঝালং বিন্দু চারিদিকে সবুজে ভরে যাওয়া গ্রাম আর তার মধ্যে জলঢাকা নদী বয়ে চলা অসাধারণ দৃশ্য। না গেলে বুঝতে পারবেন না ঝালং যাওয়ার জন্য আপনারা নিউ জলপাইগুড়ি থেকে গাড়ি বুক করুন এবং সোজা পৌঁছে যান ঝালং বিন্দু উদ্দেশ্যে আর যদি আপনারা আকাশ পথে আসেন তাহলে আপনাকে বাগডোরা এয়ারপোর্টে নামতে হবে যারা রোমাঞ্চ পছন্দ করেন তারা চাইলে পশ্চিমবঙ্গ উন্নয়ন নিগমের তাঁবুতে গিয়ে রাত্রি যাপন করতে পারেন নদীর ধারেই তাবু থাকে এবং তা ছাড়াও প্রচুর বেসরকারি হোটেল রয়েছে যেমন হোয়াইট হাউজ হোম স্টে হোম স্টে হোটেলের খরচা হবে দুই হাজার থেকে তিন হাজার টাকার মতো।
4.. তাকদা:- ঘুরে আসুন ইতিহাসের গন্ধমাখা ব্রিটিশ বাংলা চা বাগান আর রঙিন অর্কিডের স্বর্গরাজ্য তাগদা এটি আপনার দার্জিলিং জেলার অবস্থিত এবং দার্জিলিংয়ের খুব কাছেই এই একটি ছবির মতো সুন্দর গ্রাম হল তাগদ এই গ্রামে আছে এক অসম্ভব সুন্দর নির্জনতা সঙ্গে বিশুদ্ধ বাতাস। তাকদা শব্দের অর্থ হলো মেঘে ঢাকা কুয়াশায় ঘেরা। এখানে গেলে আপনার মনে হবে কুয়াশা আপনার হাতের মুঠোয় এবং চারিদিকে দেখতে পাবেন সবুজে ঘেরা চা বাগান তার সাথে রাস্তার দু’ধারে বড় বড় পাইন গাছের সারি এখানে সবথেকে বিখ্যাত জায়গা হচ্ছে অর্কিড হাউস সেখানে এমন কিছু অর্কিড পাওয়া যায় যেগুলো আপনি অন্য কোথাও দেখতে পাবেন না এখানকার বেশিরভাগ বাড়ি দেখলে আপনার মনে হবে বেশ পুরনো আর সত্যিই তাই কারণ এগুলি সবই ব্রিটিশ আমলে তৈরি ব্রিটিশ আমলের অফিসাররা এখানে আসতে এবং তারা এই জায়গাটি কে ভালবেসে ফেলেছিলান। তাদের তৈরী বাংলা বল আজও রয়ে গেছে এবং চাইলে এ বাংলা বলি আপনারা ঘুরেও দেখতে পারবেন চারিদিকে নিস্তব্ধ নির্জন এবং সবুজের সমারোহ আর পাখির ডাক উপভোগ করতে চাইলে অবশ্যই তারা ঘুরে আসুন তার মাত্র তিন কিলোমিটার দূরে আছে তিনচুলে লামাহাটা মংপু আরো কত কী যে আপনি পায়ে হেঁটে ঘুরে দেখতে পারেন।
5. দার্জিলিং:- যাকে ছাড়া এই প্রতিবেদনটি অসম্পূর্ণ হয়ে যাবে সেটা হচ্ছে দার্জিলিং এই গরমে সবচেয়ে মনোরম ঠান্ডা ঠান্ডা পরিবেশন করতে চাইলে ঘুরে আসুন দার্জিলিং তবে যেভাবে আপনাদের পাঁচটা ট্যুর প্ল্যান বললাম সবকটা দার্জিলিং এর সামনে ত্রিবেণী ঝালং তাকদা সবই স্বল্প খরচে গ্রীষ্মের দাবদাহে থেকে মুক্তি দিতে পারে এই দার্জিলিং নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে নেমে নিজে গাড়ি বুক করতে পারেন অথবা শেয়ারে গাড়ি ভাড়া করে যেতে পারেন আবার গাড়ি বুক করলে আপনাদের যাওয়া বেশি সুবিধা এবং আরামদায়ক আপনারা দার্জিলিং এর টাইগার হিলে সূর্যোদয় আপনাদের মনের সব প্রান্তিকে মুছে ফেলবে সঙ্গে বাতাসিয়া লুপ এবং জাপানিজ টেম্পল চিড়িয়াখানা মহাকাল মন্দির সবাই আপনারা ঘুরে দার্জিলিংয়ের কোথায় যাবেন কোথায় থাকবেন তার সমস্ত ভিডিও আমার ইউটিউব চ্যানেল travel with jayee দেওয়া আছে আপনারা সেখানে গিয়ে দেখে নিতে পারেন এবং সেই মতো আপনারা আপনাদের প্রিয় জন আর পরিবারের সাথে বেরিয়ে আসুন।